নোট বন্দী যে সমস্ত নতুন রূপের দুর্নীতির জন্ম দিয়েছে, এগুলো তার কয়েকটি দৃষ্টান্ত মাত্র। লাইনে দাঁড়ানো জনগণ নগদ টাকা পাননি, কিন্তু দুর্নীতিপরায়নদের তা পেতে অসুবিধা হয়নি। সরকার এখন বলছে -- এই দুর্নীতির জন্য ব্যাঙ্কগুলোকে দায়ী করুন।
একথা অস্বীকারের নয় যে, ব্যাঙ্ক ও আরবিআই-এর কিছু কর্তাব্যক্তি এই দুর্নীতিতে জড়িয়ে রয়েছে -- আর ব্যাঙ্কগুলোর অধিকাংশ সাধারণ কর্মী দিনরাত কাজ করে নোট বন্দী সংকটের মোকাবিলার চেষ্টা করেছেন এবং জনগণের রোষের মুখে পড়েছেন।
আসল প্রশ্নটা অতএব হল, নোট বন্দী সত্ত্বেও দুর্নীতি যদি অব্যাহত থাকে ও তার বাড়বাড়ন্ত ঘটে, তাহলে দুর্নীতি প্রতিরোধের মিথ্যা প্রতিশ্রুতিতে এত যন্ত্রণা চাপানোর কোনো দরকার আদৌ ছিল কি?
প্রধানমন্ত্রীর নিজস্ব ওয়েবসাইটে থাকা তথ্য থেকে জানা যাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী ১৩ নভেম্বর থেকে ২৭ নভেম্বরের মধ্যে নোট বন্দী নীতি সম্পর্কে সারা দেশে ছটি বক্তৃতা দেন, যার মধ্যে জাতির প্রতি তার রেডিও বার্তা মন কি বাত-ও রয়েছে। ঐ সমস্ত বক্তৃতার বিষয়বস্তুও ঐ ওয়েবসাইটে রয়েছে।
বক্তৃতাগুলোর তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে যে, (অনুবাদ করে নেওয়ার পর) নোট বন্দী পদক্ষেপ ও তার লক্ষ্যগুলো সম্পর্কে আখ্যানের অভিমুখ প্রধানমন্ত্রী পরিবর্তন করেছেন।
তার ২০১৬-র ৮ নভেম্বরের বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী যখন নোট বন্দী নীতির ঘোষণা করলেন, সেই বক্তৃতায় তিনি "জাল মুদ্রা”-র চেয়ে "কালো টাকা" এই শব্দবন্ধ চার গুণ বেশি ব্যবহার করেন।
তার ২৭ নভেম্বরের বক্তৃতায় তিনি "ডিজিটাল/নগদহীন" কথাটা "কালো টাকার" তিনগুণ বেশি ব্যবহার করেন, অার তাতে "জাল নোট"-এর কোনো উল্লেখই ছিল না। স্মরণ করুন, তার প্রথম ৮ নভেম্বরের ভাষণে "ডিজিটাল/নগদহীন"-এর কোনো উল্লেখই ছিল না।