[ সিপিআই(এমএল) পলিট ব্যুরোর বিবৃতি, লিবারেশন, জুন ১৯৮৯ থেকে]
চীনের সাম্প্রতিক ঘটনাবলীতে সিপিআই(এমএল) গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে। সংবাদে জানা যাচ্ছে যে, তিয়েন-আন-মেন স্কোয়ারে সামরিক বাহিনীর হাতে বহু সংখ্যক ছাত্র ও নিরীহ জনগণ নিহত হয়েছেন। সমাজতান্ত্রিদ দেশে এই ধরনের মর্মান্তিক ঘটনা সত্যিই দুঃখজনক এবং সমগ্র বিশ্বের প্রগতিশীল ও গণতান্ত্রিক জনগণ যে দুঃখ ও বেদনা প্রকাশ করেছেন আমরাও তার অংশীদার।
সিপিআই(এমএল) এটিও লক্ষ্য করছে যে সাধারণভাবে পশ্চিমী ধনতান্ত্রিক দেশগুলি এবং বিশেষ করে আমেরিকান সাম্রাজ্যবাদ ঘোলা জলে মাছ ধরতে চাইছে। চীনের অভ্যন্তরে কিছু মার্কসবাদ বিরোধী ও সমাজতন্ত্র বিরোধী শক্তির সাথে যোগসাজশ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উদ্ভূত সমস্যাটির কোনো ধরনের আপোশ মীমাংসার পথে বাধা সৃষ্টির জন্য মরীয়া প্রচেষ্টা চালিয়েছে, গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলনকে চীনের সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে দাঁড় করাতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়েছে এবং এইভাবে সে ১৯৪৯ সালের ঐতিহাসিক পরাজয়ের বদলা নিতে চেয়েছে।
চীন থেকে আসা সাম্প্রতিক সংবাদে বোঝা যাচ্ছে যে, পরিস্থিতি দ্রুতই স্বাভাবিক হয়ে আসছে এবং পশ্চিমী সংবাদ মাধ্যমগুলির দ্বারা প্রচারিত গুজবগুলি ও ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমগুলির মারফৎ সেগুলির যাচাই না করে ঢালাও প্রচার বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হল গালপল্প।
ভারতবর্ষে দক্ষিণপন্থী প্রতিক্রিয়াশীল শক্তিগুলির চক্রান্তমূলক উদ্দেশ্য সম্পর্কে সজাগ থাকার জন্য আমরা ভারতীয় জনগণের কাছে আবেদন জানাচ্ছি। এই শক্তিগুলি চীনের মর্মান্তিক ঘটনাকে পুঁজি করে প্রকৃতপক্ষে ভারতের বাম আন্দোলনকে লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে এবং ভারতীয় জনগণের গণতান্ত্রিক সংগ্রামের বাম মোড় নেওয়ার নতুন সম্ভাবনাকে বানচাল করার চক্রান্ত করছে।
আমরা আশা করি, গণতন্ত্রের জন্য জনগণের আন্দোলনের পিছনকার মূল কারণগুলি চীনের কমিউনিস্ট পার্টি গভীরভাবে বিশ্লেষণ করবেন এবং গণতন্ত্রের জন্য জনগণের আকাঙ্খা পূরণ করার জন্য প্রয়োজনীয় রাজনৈতিক সংস্কারের কাজ হাতে নেবেন। আমরা আরও আশা করি যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তার সম্পর্কের সমগ্র বিষয়টি চীনা নেতৃত্ব পর্যালোচনা করবেন এবং সমাজতান্ত্রিক দেশগুলির মধ্যকার ঐক্যকে শক্তিশালী করার জন্য প্রচেষ্টাকে বাড়িয়ে তুলবেন।
আমরা স্থির নিশ্চিত যে, ১৯৪৯ সালের পূর্বেকার যুগে চীনকে নিয়ে যাওয়ার জন্য সাম্রাজ্যবাদীদের স্বপ্ন কখনোই সফল হবে না এবং বর্তমান বিশৃঙ্খলা অতিক্রম করে চীনের কমিউনিস্ট পার্টি ও চীনের সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা বিজয়ী ও প্রাণবন্ত হয়ে উঠে দাঁড়াবে।
৮ জুন, ১৯৮৯