(ষষ্ঠ পার্টি কংগ্রেসের রাজনৈতিক-সাংগঠনিক রিপোর্ট থেকে)
আসামের কার্বি আংলং ও উত্তর কাছাড় পার্বত্য জেলায় পার্টির বিশ্বাসযোগ্যতা যথেষ্ট ব্যাপক। যুবকদের নতুন বাহিনী পার্টিতে ও এএসডিসি-র স্বায়ত্ততার আন্দোলনে ক্রমশই যুক্ত হচ্ছে, যে স্বায়ত্ততার আন্দোলন উগ্র জাত্যাভিমান থেকে মুক্ত, ভগ্মোন্মুখ অসমীয়া সমাজে যা একগুচ্ছ সংখ্যালঘু জাতিসত্তা গোষ্ঠীকে একটি ছাতার তলায় ঐক্যবদ্ধ করেছে, যা কমিউনিজমের সু-উচ্চ আদর্শের দ্বারা অনুপ্রাণিত এবং যার মধ্যে উত্তর-পূর্ব ভারতের চেহারা পাল্টে দেওয়ার যথেষ্ট সম্ভানা রয়েছে।
কিন্তু আমাদের এটি বুঝতে হবে যে, কেবল পতাকা পরিবর্তন করলেই পার্টিকে সামনে আনা যায় না। শুধুমাত্র পরিষদের কাজকর্মের তত্ত্বাবধান করা এবং স্বায়ত্ততার আন্দোলনকে পরিচালিত করার মধ্যেই পার্টির ভূমিকা সীমাবদ্ধ থাকতে পারে না। পার্টিকে বরং ভূমিসংস্কারের ক্ষেত্রে দরিদ্র কৃষকদের ইস্যুগুলিকে তুলে ধরে স্বায়ত্ততার আন্দোলনের সীমাবদ্ধতাকে ভেঙ্গে এগিয়ে যাওয়ার বিষয়ের ওপরই সচেতনভাবে কেন্দ্রীভূত করতে হবে। কেবলমাত্র তখনই পার্টির এক স্বাধীন ভিত্তি ও একনিষ্ঠ কমিউনিস্ট ক্যাডারদের গড়ে তোলা যেতে পারে।
বেশ কয়েক বছর ধরে জেলা কাউন্সিলের ক্ষমতায় থাকার ফলে সেখানে কিছু জটিলতার জন্ম হয়েছে। জীবনযাত্রায় স্বচ্ছলতা আসা, জেলা কাউন্সিল ও কার্যকরী কমিটির সদস্যদের চারপাশে আমলা-কন্ট্রাক্টর ও ব্যবসায়ীদের চক্র গড়ে ওঠা, পার্টি ও এএসডিসি-র জেলা কাউন্সিলের তল্পিবাহক হয়ে পড়া, জনগণ ও জনগণের আন্দোলন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া, গোষ্ঠী লড়াই শুরু হওয়া ইত্যাদি হল কয়েকটি নমুনা। যদিও আমরা ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে নির্বাচনে জিতেছি, কিন্তু জনগণের চোখে সংগঠনের নৈতিক কর্তৃত্বের ক্ষয় ঘটেছে। এএসডিসি এবং জেলা কাউন্সিলের বর্তমান জটিলতা পেটিবুর্জোয়াদের দ্বারা জাতিসত্তা আন্দোলনের নেতৃত্ব কুক্ষিগত করার এবং বুর্জোয়া-জমিদার ব্যবস্থায় ধাপে ধাপে অঙ্গীভূত হয়ে পড়ার মূল তাত্ত্বিক প্রশ্নকেই তুলে ধরছে।