বর্তমান সংস্করণের ভূমিকা হায় আমাকে একলাই সই করতে হবে। ইউরোপ ও আমেরিকার সমগ্র শ্রমিকশ্রেণী যাঁর কাছে সবচাইতে বেশি ঋণী সেই মার্কস হাইগেট সমাধি-ভূমিতে শান্তিলাভ করেছেন। তাঁর সমাধির ওপর ইতিমধ্যেই প্রথম তৃণরাজি মাথা তুলেছে। তাঁর মৃত্যুর পর 'ইস্তাহার'-এ সংশোধন বা সংযোজন আরও অভাবনীয়। তাই এখানে স্পষ্টভাবে নিম্নলিখিত কথাগুলো আবার বলা আমি প্রয়োজন মনে করি :
'ইস্তাহার'-এর ভিতরে যে মূল চিন্তা প্রবাহমান তা হল এই : ইতিহাসের প্রতি যুগে অর্থনৈতিক উৎপাদন এবং যে সমাজ-সংগঠন তা থেকে আবশ্যিকভাবে গড়ে ওঠে তা-ই থাকে সে যুগের রাজনৈতিক ও মানসিক ইতিহাসের মূলে, সুতরাং (জমির আদিম যৌথ মালিকানার অবসানের পর থেকে) সমগ্র ইতিহাস হয়ে এসেছে শ্রেণীসংগ্রামের ইতিহাস, সামাজিক বিবর্তনের বিভিন্ন পর্যায়ের শোষিত ও শোষক, অধীনস্থ ও অধিপতি শ্রেণীর সংগ্রামের ইতিহাস; কিন্তু এই লড়াই আজ এমন পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে যে শোষিত ও নিপীড়িত শ্রেণী (সর্বহারা) নিজেকে শোষক ও নিপীড়ক শ্রেণীর (বুর্জোয়া) কবল থেকে উদ্ধার করতে গেলে সেইসঙ্গে গোটা সমাজকে শোষণ, নিপীড়ন ও শ্রেণীসংগ্রাম থেকে চিরদিনের মতো মুক্তি না দিয়ে পারে না – এই মূল চিন্তাটি পুরোপুরি ও একমাত্র মার্কসেরই চিন্তা
একথা আমি বহুবার বলেছি। কিন্তু ঠিক আজকেই এ বক্তব্য 'ইস্তাহার'-এর পুরোভাগেও রাখা প্রয়োজন।
ফ্রেডারিক এঙ্গেলস
লন্ডন, ২৮ জুন, ১৮৮৩